Saturday, June 14, 2025

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে সেনাসদস্যের বাড়িতে হামলা-আগুন দেওয়ার অভিযোগ

আরও পড়ুন

রাজশাহীর পুঠিয়ায় দুই সেনাসদস্যের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার (৯ জুন) দুপুরে উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের হাতিনাদা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। ‘পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে না পাওয়ায়’ এই হামলার ঘটনা ঘটে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ভুক্তভোগী দুই সেনাসদস্য হলেন কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে কর্মরত তরিকুল ইসলাম এবং রাজশাহী সেনানিবাসে কর্মরত মো. আল-আমিন। তাঁরা দুজন চাচাতো ভাই। হাতিনাদা গ্রামে একজনের বাড়ি থেকে অন্যজনের বাড়ির দূরত্ব ৩০০ মিটার।

অভিযুক্ত ব্যক্তি হলেন বানেশ্বর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রফিকুল ইসলাম। তিনি ঘটনার পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন। এ ঘটনায় তাঁকে প্রধান আসামি করে পুঠিয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে। মামলায় মোট ১০ জন আসামির নাম উল্লেখ করা হয়েছে ও অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছেন আরও কিছু ব্যক্তি। সেনাসদস্য তরিকুল ইসলামের বাবা আবদুল হান্নান বাদী হয়ে থানায় মামলাটি করেছেন।

আরও পড়ুনঃ  পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নেবে সরকার: শিক্ষা উপদেষ্টা

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুরে রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর লোকজন নিয়ে সেনাসদস্য তরিকুল ইসলামের বাড়িতে হামলা চালান। ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাটের পর বাড়িটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পরে তাঁরা চলে যাওয়ার সময় সেনাসদস্য আল-আমিনের বাড়ির কয়েকটি জানালার কাচ ভেঙে যান। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তরিকুলের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণ করেন।তরিকুল ইসলামের পরিবারের অভিযোগ, তরিকুলের বাবা আবদুল হান্নান আওয়ামী লীগকে ভোট দেন। তবে মিছিল-মিটিংয়ে যান না। তিনি আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে রফিকুল ইসলাম তাঁদের পরিবারের কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। চাঁদা না পেয়ে তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। গতকাল দুপুরে এলাকার একটি চায়ের দোকানে আবদুল হান্নানের আরেক ছেলে মো. তুষার তাঁর মামাতো ভাইকে নিয়ে হাসাহাসি করছিলেন। এটা দেখেই রফিকুল ইসলাম ধারণা করেন, তাঁকে কটাক্ষ করে হাসাহাসি করা হচ্ছে। এরপর তিনি তুষারকে মারধর করেন। তুষার বাড়িতে এসে বিষয়টি জানালে তাঁর বাবা হান্নান রফিকুল ইসলামের উদ্দেশে উচ্চ স্বরে কিছু কথা বলেন। এর কিছুক্ষণ পরেই রফিকুল ইসলাম তাঁর লোকজন নিয়ে হান্নানের বাড়িতে হামলা করেন। প্রাণভয়ে পরিবারের সদস্যরা তখন পালিয়ে যান।

আরও পড়ুনঃ  ভোলাহাট সীমান্ত দিয়ে আরও ৮ বাংলাভাষীকে পুশইন করল বিএসএফ

সেনাসদস্য তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘রফিকুল আমার বাড়িতে এসে একাধিকবার চাঁদা দাবি করেছেন। চাঁদা না দেওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন। হামলা করার একটা সুযোগ খুঁজছিলেন। দোকানে আমার ভাইকে মারধরের পর তিনি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে হামলা চালান।’

তরিকুলের বাবা আব্দুল হান্নান বলেন, ‘রফিকুলের সঙ্গে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই। তবুও কেন আমার বাড়িতে পেট্রল ঢেলে আগুন লাগানো হলো? আমার ছেলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করে। ছুটিতে সে বাড়িতেই ছিল। তাকে নিয়ে আমরা চাতালে লুকিয়ে প্রাণ বাঁচাই। রফিকুল গালাগালি করেন এবং বলেন, তরিকুলকেও ধরে “সাইজ” করব।’

আরও পড়ুনঃ  ভারতের সেনা সর্বাধিনায়কের স্বীকারোক্তি, রাজনৈতিক চাপে মোদি সরকার

ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ও বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম রফিক আত্মগোপনে রয়েছেন। তাঁর মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। তাই তাঁর সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

পুঠিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) দুলাল হোসেন বলেন, সেনাসদস্য তরিকুল ইসলামের বাবা আবদুল হান্নান বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় চাঁদা দাবির কথা বলা নেই। কথা-কাটাকাটির জেরে হামলা বলে এজাহারে বলা হয়েছে। মামলার প্রধান আসামি বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম। তিনিসহ অন্য আসামিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ