বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান দল বিএনপি এবার নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেছে আলটিমেটামের সুরে। ঢাকার নয়াপল্টনে এক সমাবেশে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমান বলেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে।
একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচন প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে এখন বিএনপির শীর্ষ পর্যায় থেকে এমন বক্তব্য দেওয়া হলো বলে বিশ্লেষকেরা মনে করেছেন।
প্রশ্ন হচ্ছে, ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচনের জন্য কেন চাপ বাড়াতে চাইছে বিএনপি, কতটা চাপ তৈরি করতে পারবে তারা?
নির্বাচনের সময়ের ব্যাপারে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়ে এগোতে গিয়ে রাজনীতিতে বিএনপি একা হয়ে পড়বে কিনা, এই প্রশ্নেও আলোচনা রয়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
কারণ বিএনপির এই অবস্থানের সঙ্গে নেই বর্তমানে রাজনীতিতে প্রভাবশালী অন্য দলগুলো, অর্থাৎ জুলাই গণ-অভ্যত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপি ও জামায়াতে ইসলামী।
নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থানের প্রতি এই দলগুলোর সমর্থন রয়েছে বলা যায়।
তবে বিএনপিও অভিযোগ করছে যে, অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপি এবং সেনাবাহিনীকে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করছে।
যদিও সরকারের একাধিক উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বললে তারা এ ধরনের অভিযোগ মানতে রাজি নন।
কিন্তু বিএনপি নেতাদের বক্তব্যে সরকারের ওপর চাপ বাড়ানোর কৌশল এখন সামনে এসেছে, দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব ডিসেম্বরেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি দেশের মানুষের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছেন।
দলটির নেতারা বলছেন, বাধ্য না হলে অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচনের রোডম্যাপ দেবে না। এমনকি সরকার ডিসেম্বরে নির্বাচন করতে চায় না বলে তারা মনে করেন। সে কারণে সরকারকে বাধ্য করানোর চেষ্টা তাদের থাকবে।
বিএনপির বক্তব্য বা চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়ে সরকারের দিক থেকে তাৎক্ষণিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বুধবার জাপান সফরে গিয়ে দেশটির সরকারের ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশে ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করার পুরানো অবস্থানই তুলে ধরেছেন।
অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের ভাবনা নিয়ে সম্প্রতি যে সংকট তৈরি হয়েছিল, তা সামাল দিতে তিনি গত শনি ও রোববার দুই দিনে ২২টি রাজনৈতিক দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।
দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনায় সংকটের সমাধান হয়েছে বলা হচ্ছে।
রাজনীতিকদের অনেকে এবং বিশ্লেষকেরা বলছেন, আপাতত উত্তেজনা থেমেছে। কিন্তু এই সরকারের অংশীজনদের মধ্যে বড় দুই শক্তি বিএনপি ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরকারের দূরত্ব কমেনি; রয়ে গেছে অস্বস্তি।