বাংলাদেশ
গুম সংক্রান্ত প্রতিবেদন ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
গুম সংক্রান্ত প্রতিবেদন ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বুধবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন সভাপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেন।
অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জুন ২০২৫ | ১৭:৫৭
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘গুম সংক্রান্ত প্রতিবেদন ওয়েবসাইট ও বই আকারে প্রকাশের ব্যবস্থা করতে হবে। এটি ঘিরে শুধু বাংলাদেশ নয়, বৈশ্বিকভাবেও আগ্রহ রয়েছে।’
প্রধান উপদেষ্টার কাছে গুম সংক্রান্ত তদন্ত কমিশন দ্বিতীয় ইন্টেরিম রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর ড. ইউনূস এ কথা বলেন। খবর বাসসের
তিনি বলেন, ‘‘কী ভয়াবহ একেকটি ঘটনা! আমাদের সমাজের ‘ভদ্রলোকেরা’, আমাদেরই আত্মীয়-পরিজনরা এই ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে। আপনারা যা যা কিছু পেয়েছেন তার ভিত্তিতে একটি হরর মিউজিয়াম হওয়া উচিত। গা শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। এই ধরনের বন্দিশালা কেমন হয়, তিন ফিট বাই তিন ফিট খুপড়ির মধ্যে দিনের পর দিন, মাসের পর মাস আটকে থাকার যে নির্মমতা, নিষ্ঠুরতার চিত্র মানুষের কাছে তুলে ধরা উচিত।’’
বুধবার বেলা ১১টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় কমিশন প্রধান বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দেন। সদস্যদের মধ্যে নূর খান, সাজ্জাদ হোসেন এবং নাবিলা ইদ্রিস উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব সিরাজ উদ্দিন মিয়া।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা কমিশন সদস্যদের কাছে প্রতিবেদনের আশু করণীয়গুলো চিহ্নিত করে কোনটি কোন মন্ত্রণালয়ের আওতায় পড়ছে তা সুনির্দিষ্ট করে দেওয়ার নির্দেশনা দেন, যেন সরকার স্বল্পসময়ের মধ্যে কাজগুলো শুরু করতে পারে।
একজন কমিশন সদস্য প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘ঘটনাগুলো এতটাই ভয়াবহ যে জড়িত অনেক কর্মকর্তা ও অন্যরাও অনুশোচনায় ভোগেন। তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আত্মশুদ্ধির একটা প্রচেষ্টা হিসেবে। দুজন অফিসার লিখিতভাবে এর থেকে পরিত্রাণ চেয়ে চিঠিও লিখেছিলেন। চিঠিগুলো গণভবনে পাওয়া গেছে। তৎকালীন সেনাপ্রধান জনসম্মুখে এই চিঠির কথা স্বীকারও করেছেন।’
কমিশন সদস্যরা জানান, কমিশনের কাছে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৮৫০টি অভিযোগ এসেছে এবং এর মধ্যে ১ হাজার ৩৫০টি অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষ হয়েছে।
কমিশন সদস্যরা আরও জানান, অভিযোগের সংখ্যা সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
গুমের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে এখনও তিনশতাধিক ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন বলেও জানান তারা।
নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবার যেন অন্তত ব্যাংক হিসেবে লেনদেন করতে পারে সে বিষয়ে উদ্যোগ নিতে প্রধান উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান কমিশন প্রধান।
তিনি বলেন, বিদ্যমান আইনে কেউ সাত বছর নিখোঁজ থাকলে তাকে মৃত বলে ধরে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। আইন সংশোধন করে এটিকে পাঁচ বছর করার সুপারিশ করেন তিনি।
অতিদ্রুত যেন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া যায়, সে বিষয়ে করণীয় জানাতে কমিশনকে পরামর্শ দেন প্রধান উপদেষ্টা।
কমিশন সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনারা ভয়-ভীতি, নানান রকম হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে কাজ করে যাচ্ছেন। এ দেশের মানুষের জন্য আপনারা অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন। ভবিষ্যতে যারা মানুষের অধিকার নিয়ে কাজ করবে আপনারা তাদের অনুপ্রেরণা