Monday, June 16, 2025

‘এর চেয়ে রিকশা চালানো ভালো’

আরও পড়ুন

অবসরের ঘোষণা প্রত্যাহার করবেন। প্রাপ্য সম্মান দিলে ফিরবেন রোমান সানা। কী ধরনের প্রাপ্য সম্মান? ‘আমার বাড়ি-গাড়ি, যা কিছু প্রয়োজন, সরকার থেকে দেওয়া হোক। আমি যদি পদক এনে দিতে না পারি, তাহলে সব কেড়ে নেওয়া হোক—বললেন দেশের তারকা আর্চার রোমান সানা। আন্তর্জাতিক আর্চারি খেলবেন না বলে অবসরের ঘোষণা দেওয়া আর্চার রোমান সানা বলেছেন, ‘২০২৮ অলিম্পিক পর্যন্ত খেলব। আরও ১০ বছর খেলার ক্ষমতা আমার আছে। আমার সব স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। এভাবে অপমান-অপদস্থ হওয়ার চেয়ে না খেলাই ভালো। সব সময় কি স্বর্ণ পদক পাওয়া যায়? আমি কি হারতে পারি না? সব রাগ আমার ওপর। একদিন উচ্চ স্বরে জবাব দিয়েই ফেলেছিলাম। আমার জন্যই নাকি স্বর্ণপদক হাতছাড়া। বারবার সবার সামনে আমাকে অপমান করা হবে, কেন? সাত-আট ঘণ্টা অনুশীলন করে মাসে তিন হাজার টাকা দেওয়া হতো। এটা বেতনও না। ধৌত ভাতা। এর চেয়ে রিকশা চালানো ভালো।’

আরও পড়ুনঃ  শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বপ্ন পূরণ করলেন রেলের এই মহাব্যবস্থাপক

দূর থেকে দেখে মনে হতো, দেশের আর্চারি খুব সুখে আছেন। ক্রীড়াঙ্গনের অভিভাবকেরা এই খেলাটা নিয়ে গৌরব করতেন। ফুটবল, ক্রিকেটের পর আর্চারির অবস্থান হলেও এর ভেতরের অবস্থা খুবই নাজুক—একজন রোমান সানার কথায় অনেক কিছু বেরিয়ে এসেছে। দেশের প্রায় সব সংবাদমাধ্যম প্রকাশ করেছে। আর্চারদের সাফল্যে ফেডারেশন কর্মকর্তারা আভিজাত্য অনুভব করেন। রাষ্ট্রীয় পুরস্কারও নেন। অথচ মুদ্রার উলটো পিঠে লুকিয়ে আছে চাপা ক্ষোভ, কষ্ট, যন্ত্রণা। রোমান সানা বলেন, ‘আর্চারি এখন রাস্তায় থাকা মানুষের জন্য দরকার। যারা খেতে পায় না, তারা এখানে পেট ভরে খাবে আর অনুশীলন করবে। চার বছর বাসা থেকে টাকা এনে খেলেছি। ২০১৮ সালে স্পনসর হিসেবে তির আসার পর ৩ হাজার টাকা দেওয়া শুরু হয়। ২০২০ থেকে ২০২১, করোনার সময় দুই বছর কোনো টাকা পাইনি।’

আরও পড়ুনঃ  জাতীয় পরিচয়পত্রের অসুন্দর ছবিটি ঘরে বসে ৩০ মিনিটেই বদলাবেন যেভাবে

প্রতি বছর সাত-আটটা টুর্নামেন্ট খেলতে হচ্ছে। পদকও আসছে। বিশ্ব আর্চারিতে ব্রোঞ্জ পাওয়া রোমান সানার প্রশ্ন, ‘এত অর্জন, স্পনসর নাই কেন? অলিম্পিকে চাইলেই কি পদক জয় করা যায়? যখন ধারাবাহিকভাবে অংশগ্রহণ করবে, অন্যান্য খেলায় বারবার পদক আসবে, তখন অলিম্পিক নিয়ে কথা বলা যাবে। আমরা পদকের টার্গেট করতে পারব। অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ দেখে একাধিক আর্চার এই খেলা ছেড়ে গেছেন। অনেক কষ্ট করে আনসারের চাকরিটা পেয়েছিলাম বলে।’

সাবেক ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলের কাছেও নাকি আর্চাররা চাকরির অনুরোধ করেছিলেন। রোমান সানা বললেন, ‘আমি রাসেল স্যারের কাছে অনুরোধ করে বলেছিলাম, স্যার, একটা ব্যবস্থা করে দেন। উনি হ্যাঁ দেখছি, হ্যাঁ দেখছি পর্যন্ত বললেন।’

আরও পড়ুনঃ  বেইলি রোডের আগুনে দুই সন্তানসহ লাশ হলেন মা

জাহিদ আহসান রাসেল বলেন, ‘নাহ, আমার কাছে বলেনি কখনো। আমি প্রথম শুনলাম রোমান সানা খেলবে না। আমার কাছে ওর বাবা-মায়ের অসুস্থতার কথা বলেছিল, আমি ৫ লাখ টাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। রোমান যে বিয়ে করেছে, সেটাও আমি জানতাম না। আমি মন্ত্রী, আমাকেও বলেনি। ৩ হাজার টাকায় কীভাবে চলবে? আগে একা ছিল, এখন বিয়ে করেছে। ইজ্জতের ব্যাপার। সে খুব ভালো খেলোয়াড়। যে কোনো প্রতিষ্ঠানে আমাকে কথা বলতে বললে আমি তার জন্য অনুরোধ করব। ওর ডিমান্ড আছে।’ রাসেল বলেন, ‘রোমান আসলে লাজুক টাইপের ছেলে। বোম মারলেও কথা বের হয় না। আমি ওর সঙ্গে কথা বলব।’

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ