Sunday, June 15, 2025

রামগঞ্জে হাসপাতালে ঢুকে হামলায় সমন্বয়ক-সাংবাদিকসহ আহত ১০, গ্রেপ্তার ৩

আরও পড়ুন

সারাদেশ
রামগঞ্জে হাসপাতালে ঢুকে হামলায় সমন্বয়ক-সাংবাদিকসহ আহত ১০, গ্রেপ্তার ৩
রামগঞ্জে হাসপাতালে ঢুকে হামলায় সমন্বয়ক-সাংবাদিকসহ আহত ১০, গ্রেপ্তার ৩
গ্রেপ্তারকৃত মাসুদ, কামাল ও তুষার।

প্রকাশ: ০৯ জুন ২০২৫| আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ | ১০:১২

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক রেদোয়ান সালেহীন নাঈমের ওপর হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এক সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।

গতকাল রোববার রাত ৯টার দিকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভিতরে ও বাহিরে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে দ্রুত রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবুল বাশার ও এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এ ঘটনায় রোববার দিবাগত রাত ১টায় আঙ্গারপাড়া ও টামটা এলাকা থেকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত মাসুদ, কামাল ও তুষার নামে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার বিকাল সাড়ে ৪টায় উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের শৈরশই গ্রামের গনক বাড়ির উঠানে ফুটবল খেলার সময় একই বাড়ির উদ্দীপন এনজিও কর্মী সোহাগ আলমের এক বছর বয়সী শিশু আনাছুর রহমানের মাথায় ফুটবল পড়ে গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনায় শিশু আনাছের মা আমেনা আক্তার বিথী ফুটবল খেলোয়াড় রাহুল (১০) ও সাফোয়ানকে (১২) জিজ্ঞাসা করলে রাহুল ও সাফোয়ানের স্বজনদের সাথে বাগবিতণ্ডা হয়।

আরও পড়ুনঃ  সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনের ভাগনে-ভাতিজারা এখনও ঠিকাদারিতে

সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিশু আনাছের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আনাছের বাবা সোহাগ আলম সন্তানকে নিয়ে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পথে খেলোয়াড় রাহুলের বাবা রাজন ও সাফোয়ানের বাবা লিপনসহ কামাল ও জাহাঙ্গীর শিশুর বাবা সোহাগকে আইনের আশ্রয়ে গেলে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেয়।

পরে আনাছের আত্মীয়-স্বজনদের সহযোগিতায় শিশু আনাছকে রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসলে হাসপাতাল সংলগ্ন আঙ্গারপাড়া এলাকার রাহুল ও সাফোয়ানের নিকটাত্মীয় মাসুদ, তুষার, কামালসহ কয়েকজনের নেতৃত্বে শিশু আনাছের ফুফু জান্নাতুল ফেরদাউস জোছনাকে হাসপাতালের ভিতরে ঢুকে চুল টেনে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে।

আরও পড়ুনঃ  সন্ধ্যায় জেল থেকে বেরিয়ে রাতে ডাকাতির চেষ্টা, পিস্তলসহ গ্রেপ্তার ৩

এ ঘটনায় শিশুর বাবা সোহাগ আলম তার নিকটাত্মীয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেককে খবর দিলে তারা বিষয়টি জানতে হাসপাতালে যায়। সেখানে শিশু আনাছের বাবার কাছে পুরো ঘটনা জানতে চাওয়ার একপর্যায়ে মাসুদ, তুষার, কামাল ও লিটনসহ ২০/২৫ জনের একটি গ্রুপ বাঁশ, লাঠি ও কাঠ নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে রেদোয়ান সালেহীন নাঈম, আজিজ শাকিল, সাঈদ আলম শাহীন, জাহীদ হাসান পাবেল, তারেক আজিজ, সায়মন স্যাম, তারেককে বেদম মারধর করে। এ ঘটনা খবরে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে দৈনিক খবরের কাগজ রামগঞ্জ প্রতিনিধি রায়হানুর রহমান ঘটনাস্থলে গিয়ে ভিডিও চিত্র ধারণ করতে গেলেও তাকেও মারধর করা হয়।

আহতরা সবাই রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

আরও পড়ুনঃ  এটিএম আজহারের রায়ে আদালতের ৪টি পর্যবেক্ষণ

রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার আনোয়ার হোসেন বলেন, হসপিটালে ঢুকে মারধর করার ঘটনায় আমরা নিজেরা উদ্বিগ্ন। আমাদের চিকিৎসক ও নার্স তারাও অনিরাপদ।

ঘটনার খবর পেয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুব আলম রাত ১০টায় রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান। এ সময় তিনি বলেন ‘ন্যক্কারজনক এই হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে হবে। আমরা পুলিশের সাথে কথা বলেছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে। আমরা অন্যথায় বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করবো।

রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবুল বাশার বলেন, খবর পাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এ ঘটনায় নেতৃত্বদানকারী মাসুদ, তুষার ও কামালকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ