Saturday, June 14, 2025

শক্তিশালী ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা? ইসরায়েল জানালো তারা পারবে না!

আরও পড়ুন

যে রাষ্ট্র গোটা বিশ্বের উপর নজর রাখে, এবার তার ঘাড়ের ওপর নিঃশ্বাস ফেলছে এক শক্ত প্রতিপক্ষ। বহু বছর ধরে যেই দেশটি ইরানকে বারবার হুমকি দিয়ে এসেছে, আজ তাদের নিজেদেরই শীর্ষ পর্যায়ের একটি পত্রিকা লিখছে—‘আমরা পারবো না।’ হ্যাঁ, ইসরায়েল নিজেই স্বীকার করেছে—ইরানে হামলা করা শুধু কঠিনই নয়, বরং প্রায় অসম্ভব।

ইরানও পাল্টা বার্তা দিয়ে বলেছে, ‘যদি ছোঁবে, তবে পুড়ে যাবে।’ এটি কোনো কাব্যিক রূপকথা নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের ভৌগোলিক ও কৌশলগত বাস্তবতার এক স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি। ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ কট্টর ডানপন্থী দৈনিক Makor Rishon সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলেছে, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাত হানা এখন আর সহজ কাজ নয়—বরং তা হবে অত্যন্ত জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ।

আরও পড়ুনঃ  পুতিনের হুঁশিয়ারি ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন’: ম্যাথিউ মিলার

প্রতিবেদনটি আরও জানায়, ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রকল্পকে পুরোপুরি থামিয়ে দেওয়া বিমান হামলার মাধ্যমে কার্যত অসম্ভব। এই বক্তব্য শুধু একটি সামরিক সীমাবদ্ধতার স্বীকারোক্তি নয়, বরং ইরানের প্রতিরক্ষা ক্ষমতা ও কৌশলগত সক্ষমতার প্রতি এক অনিচ্ছাকৃত স্বীকৃতি।

গত কয়েক মাসে ইরান একাধিকবার ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে কৌশলগত হামলা চালিয়েছে। আল-মায়াদিন টেলিভিশনের বরাত দিয়ে জানা গেছে, এসব হামলায় ইসরায়েলের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তাবেষ্টিত এলাকাগুলো ভেদ করে প্রবেশ করা হয়েছে, যা ইঙ্গিত করে—ইরান শুধু হুমকি দিয়েই থেমে নেই, প্রয়োজনে পাল্টা আঘাত হানার পূর্ণ সক্ষমতা তাদের রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজিজ নাসির জাদেহ বলেন, “ইসরায়েলের হুমকিগুলো ফাঁকা বুলি ছাড়া কিছু নয়। যারা সত্যিকারের হুমকি দিতে সক্ষম, তারা শিশুসুলভ ভাষা ব্যবহার করে না।” তিনি আরও বলেন, ইরান এখন এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে যেখানে প্রতিটি জবাব কথায় নয়, কাজে প্রমাণিত হবে।

আরও পড়ুনঃ  মুসল্লিদের লাথি মারার ঘটনায় ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে মাহমুদ মাদানির চিঠি

আলোচনায় যোগ দেন ইরানের ‘আইআরজিসি’ প্রধান মেজর জেনারেল হোসেন সালামী। তার ভাষায়, “আমরা সব সম্ভাবনার জন্য প্রস্তুত। আমাদের প্রতিরক্ষা, আত্মবিশ্বাস এবং জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংকল্প অটুট।”

এই বক্তব্যগুলো কেবল কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া নয়—এগুলো ভবিষ্যতের জন্য দেওয়া প্রস্তুতির বার্তা। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো—ইসরায়েলের অভ্যন্তর থেকেই এবার সেই ভয়াবহতার স্বীকৃতি পাওয়া যাচ্ছে।

তবে কি এই শিকারোক্তি ইসরায়েলের কৌশলগত পিছু হটার ইঙ্গিত? বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষকরা বলছেন—যদি সংঘর্ষ হয়, তা হবে শুধু কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময় নয়, বরং একটি বিস্তৃত ও বিপজ্জনক যুদ্ধ, যা গোটা অঞ্চলকেই প্রভাবিত করতে পারে।

আরও পড়ুনঃ  গাজায় ভবন ধসে পাঁচ ইসরায়েলি সেনা নিহত

বর্তমান বিশ্বের যুদ্ধক্ষেত্রে কেবল অস্ত্র নয়, তথ্যও এক ভয়ানক হাতিয়ার। তাই এমন পরিস্থিতি শুধু মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক ব্যাপার নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্যও এক অশনি সংকেত।

আগুন নিয়ে খেলা শুরু হয়েছে। তবে কেউ একজন যেন আগেই জানিয়ে দিচ্ছে—“আমি পোড়ার জন্য নয়, পুড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত।” আর সেই someone হচ্ছে—পারস্য উপসাগরীয় পরাশক্তি ইরান

আপনার মতামত লিখুনঃ

সর্বশেষ সংবাদ