খাগড়াছড়ির রামগড় উপজেলার বাগানবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. নাজিম উদ্দিন। পবিত্র ঈদুল আজহায় কুরবানির দেওয়ার উদ্দেশে একটি মহিষ কেনেন তিনি। গতকাল ঈদের দিন সকালে অসাবধানতাবশত ছুটে যায় মহিষটি। দিনভর চেষ্টার পরও ধরা সম্ভব হয়নি। একপর্যায়ে আতঙ্কিত হয়ে মহিষটি ছুটতে ছুটতে ফেনী নদী সাঁতরে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকে পড়ে।
ঘটনাটি বিজিবির বাগানবাজার বিওপির সদস্যরা জানতে পারেন। বিওপি কমান্ডার সঙ্গে সঙ্গে বিজিবির রামগড় ব্যাটালিয়নের (৪৩ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আহসান উল ইসলামকে অবহিত করেন। অধিনায়ক ভারতের ১১৪ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করে মহিষটি ফেরত আনার উদ্যোগ নেন।
বিএসএফ মহিষটি উদ্ধারে তাৎক্ষণিকভাবে তল্লাশি শুরু করলেও ঘন জঙ্গল ও সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নামায় মহিষটি গতকাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আজ সকাল ১১টার দিকে বিএসএফ সদস্যরা আবারও মহিষটি ধরার চেষ্টা করলে ফেনী নদী পার হয়ে সীমান্ত পিলার ২২১৩/এমপির কাছ দিয়ে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বিজিবি সদস্যরা মহিষটিকে আটক করে। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মহিষটি মালিক নাজিম উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
মহিষ ফেরত পেয়ে আবেগাপ্লুত নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘বিজিবির সহানুভূতিশীলতা ও আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমরা শুধু আমাদের কুরবানির পশুটি ফিরে পাইনি বরং আমাদের ঈদের আনন্দও ফিরে পেয়েছি। এটি শুধু একটি পশু ফেরত আনার ঘটনা নয় বরং এটি বিজিবির পক্ষ থেকে আমাদের ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং সীমান্তবাসীর পাশে থাকার এক অনন্য উদাহরণ।
এ ব্যাপারে স্থানীয়রা জানান, বিজিবি সবসময়ই মানবিক ও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে সীমান্তবর্তী এলাকার প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা ও জীবনমান উন্নয়নে সর্বদা সচেষ্ট থাকে। বিজিবির আন্তরিকতা ও পেশাদারিত্বের এই অনন্য দৃষ্টান্ত আবারও তা প্রমাণ করল।
এ ব্যাপারে রামগড় ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক বলেন, ‘কোরবানি মুসলমানদের ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি যখন এমন একটি দুর্ঘটনায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন, তখন রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বাহিনীর উচিত মানবিকভাবে পাশে দাঁড়ানো। আমরা বিএসএফের সাথে সমন্বয় করে মহিষটি ফেরত আনার উদ্যোগ নেই এবং সেটি সফল হয়েছে। মহিষটিকে আজ কুরবানি করা হয়েছে